নবজাতকের জন্য কিছু পরামর্শ
নবজাতকের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কিছু পরামর্শঃ
অনেক নতুন মা-বাবা জানেন না যে, একটি শিশু জন্ম নিলে কি কি করা প্রয়োজন। একটি শিশু জন্ম নিলে অনেক ধরণের সাবধানতা সহ বিভিন্ন দিকে নজর রাখতে হয়। নিম্নে নবজাতকের জন্য কিছু পরামর্শ দেওয়া হলো ----
১. শিশুকে জন্মের সাথে সাথে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মায়ের বুকের দুধ খেতে দিন। শিশু সাথে সাথে দুধ নাও খেতে পারে। তবুও তাকে বার বার খাওয়ানোর চেষ্টা করুন।
২. শিশুকে জন্মের পর পানি বা মধু খাওয়ানোর প্রয়োজন নেই।
৩. প্রতিবার দুধ খাওয়ানোর পরে শিশুর পিঠ চাপড়ে ঢেকুর তোলাবেন। শিশুকে আপনার বাঁম কাঁধে এমন ভাবে রাখবেন যাতে তার পেট সরাসরি আপনার কাঁধে লেগে থাকে। এবার পিঠে কয়েকটি চাপড় দিবেন। একে ডাক্তারের ভাষায় BURPING বলা হয়ে থাকে। এটা কিভাবে করতে হয় প্রয়োজনে চিকিৎসকের কাছ থেকে দেখে নেবেন।
৪. শিশুকে কাপড়ে মুড়িয়ে রাখুন। গরমের দিনে হালকা সুতি কাপড় ব্যবহার করুন। জামা কাপড় গুলো যেন হাল্কা সুতি কাপড়ের হয়। দোকান থেকে কিনে কোনো কাপড় না ধুয়ে শিশুর জন্য কখনোই ব্যবহার করবেন না।
৫. শিশুর নাভি দিনে অন্তত দুবার পরীক্ষা করুন। স্পিরিট বা হেক্সিসল-এ তুলা ভিজিয়ে পরিষ্কার করবেন। সাবধানতার সাথে নাভি প্রতি লক্ষ্য রাখবেন। যদি ভেজা বা রস গড়িয়ে পড়ে অথবা দুর্গন্ধ পাওয়া যায় তবে সাথে সাথে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন।
৬. শিশুকে সকালের নরম রোদে ১৫-৩০ মিনিট রাখবেন। এতে শিশুর জন্ডিস হওয়ার সম্ভাবনা অথবা জন্ডিসের মাত্রা কমবে।
৭. শিশুর জন্মের পর বিসিজি টিকা ও পোলিও টিকা দেওয়া প্রয়োজন। অনেকের ধারণা দেড় মাস বয়স থেকে টিকা দিতে হয়। দেড় মাস বয়সে ডিপিটি টিকা দিতে হয়। কিন্তু জন্মের পরে বিসিজি টিকা দেওয়া এবং পোলিও টিকা খাওয়ানো হয়। শিশুর জন্য বিসিজি টিকা অত্যন্ত জরুরি এ কথা অবশ্যই মনে রাখবেন।
৮. শিশু মায়ের বুকের দুধ পাচ্ছে না বা পেলেও খেয়ে পেট ভরছে না এমন কথা অনেক মা বলে থাকেন। তবুও যথাসম্ভব চেষ্টা করবেন বুকের দুধ খাওয়াতে। তারপরেও কোন সমস্যা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। নিজে থেকে অন্য কোন দুধ দেবেন না। চিকিৎসক যদি অন্য কোন দুধ যেমন BIOMIL দিতে বলে তবে তা নিয়ম অনুযায়ী তৈরি করবেন। শিশুর খাবার তৈরি করার আগে অবশ্যই হাত ভালো করে ধুয়ে নেবেন। দুধের বোতল ধোয়ার ব্যাপারে সতর্কতার প্রয়োজন। একবার তৈরি করা দুধ না খেলে, রেখে দিয়ে অনেক পরে আবার শিশুকে খেতে দেবেন না।
৯. শিশুর জ্বর, খাওয়া বন্ধ করে দেয়া, গায়ে লালচে দানা ওঠা, পায়খানার সমস্যা, অতিরিক্ত কান্না এরকম যে কোনো সমস্যায় চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন।
১০. শিশু পালনে বড়দের/বয়ঃজ্যেষ্ঠদের পরামর্শ নেওয়া ভালো। তবে বিজ্ঞান অনেক এগিয়েছে। এ কারনে অনেক ধারণা বিজ্ঞান সম্মত ভাবেই পাল্টে গেছে। তাই কিছুটা সাবধানতা অবলম্বন করা ভালো। শিশু পালনের ক্ষেত্রে চিকিৎসকের মতামত নেওয়া বিশেষভাবে প্রয়োজন। আশা করি প্রতিটি শিশুর সুস্থ ও নিরাপদ ভাবে বেড়ে উঠবে।